খুলনা | সোমবার | ০৭ জুলাই ২০২৫ | ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দুই বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটারের ‘ছক্কা’

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫৫ এ.এম | ০৫ জুন ২০২৪


ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের জন্ম গুজরাটের একটি পাঠান পরিবারে। এই হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে তাঁর কোনো পারিবারিক বন্ধন এবং আত্মীয়স্বজন নেই। তারপরও মমতা ব্যানার্জির হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের রাজনীতি শুরু করেছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, প্রথমবারের মতো লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজেপি ও কংগ্রেসের শক্তিশালী দুই প্রার্থী হারিয়ে তিনি বড় চমক দেখিয়েছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইউসুফ পাঠান যে আসনে লড়াই করেছেন, সেই বহরমপুরে গত ২৫ বছর ধরে সংসদ সদস্য ছিলেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরী। বারবার বিজয়ী এবং পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ অধীরের নামই হয়ে গিয়েছিল বহরমপুরের ‘রবিনহুড’। এলাকায় তাঁর পরিচিতি ছিল ঘরের মানুষের মতো। কিন্তু অধীরের সেই ঘর ভেঙে দিলেন ইউসুফ পাঠান। নির্বাচনী ফল অনুযায়ী, ৫৮ হাজার ৫৭ ভোটের ব্যবধানে তিনি অধীর চৌধুরীকে হারিয়েছেন।
শুধু তা-ই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের এই লাড়াইয়ে মাঝখান থেকে ফায়দা নিতে চেয়েছিল বিজেপি। বহরমপুরের আসনে তাই দলটি একজন শক্তিশালী প্রার্থী বেছে নিয়েছিল। বিজেপির প্রার্থী ডাঃ নির্মল কুমার সেন শেষ পর্যন্ত ৩ লাখ ৫ হাজার ৯৩১ ভোট পেয়েছেন। বারবার বিজয়ী অধীর পেয়েছেন ৩ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৮ ভোট। আর এই দুজনকে পেছনে ফেলে ইউসুফ পাঠান পেয়েছেন ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৩৫ ভোট।
বহরমপুরের পাঁচবারের সংসদ সদস্য অধীর কেন হেরে গেলেন, সেই বিষয়ে ইতিমধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, এবার অধীরের সমর্থনে থাকা হিন্দু ভোটের একটা বড় অংশ চলে গেছে বিজেপির দিকে। আর অধীরের মুসলিম ভোট ব্যাংকের একটি অংশ তৃণমূলের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এর ফলেই আসনটি হারাতে হয়েছে রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতিকে। 
নিজের পরাজয় মেনে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অধীর বলেছেন, ‘আমরা হার স্বীকার করলাম। বাংলার রাজনীতিতে আপাতত আমরা অপ্রাসঙ্গিক হতে চলেছি। খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। আমার ইচ্ছা-অনিচ্ছায় কিছু যায় আসে না। হেরেছি, হার নিয়েই খুশি থাকব।’ 
এদিকে জয়ের পর ইউসুফকে নিয়ে উল­াস করেছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের উদ্দেশ্যে ইউসুফ বলেছেন, ‘বহরমপুর আমার নতুন বাড়ি।’
পশ্চিমবঙ্গে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জিতেছেন ভারতের আরেক সাবেক ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। দুর্গাপুর-বর্ধমান আসনে তিনি হারিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হেভিওয়েট প্রার্থী দিলীপ ঘোষকে। দিলীপ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা। কিছুদিন আগেও তিনি ছিলেন রাজ্য সভাপতি।
কীর্তি আজাদও ইউসুফ পাঠানের মতো তৃণমূলের আলোচিত প্রার্থী ছিলেন। ১৯৮৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য কীর্তির অবশ্য একটা পুরনো রাজনৈতিক পটভূমি আছে।
বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভগবত ঝাঁ আজাদের ছেলে কীর্তি একসময় বিজেপি করতেন। টানা দু’বার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন ওই দলের প্রার্থী হিসেবে। তখন অবশ্য তিনি জিতেছিলেন নিজের রাজ্য বিহার থেকে। দিলি­ ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশনের দুর্নীতি নিয়ে সাবেক মন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে বিবাদের কারণেই তিনি বিজেপি ছাড়া হয়েছিলেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ